রিপোর্টার: শাফিন আহমেদ শিহাব, বরিশাল
রবিশাল জেলা পুলিশ সুপারের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন।
গতকাল, ১১ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে, বরিশাল জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন মহোদয় বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী থানার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজার মতো বৃহৎ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবের সময় এলাকাজুড়ে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই পরিদর্শন পরিচালিত হয়। পুলিশ সুপার পূজামণ্ডপের সার্বিক অবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং বিভিন্ন মহল্লায় স্থাপিত মণ্ডপগুলোতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন।
পূজামণ্ডপে সরাসরি পরিদর্শন
পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে প্রবেশ করেন এবং পূজামণ্ডপের দায়িত্বশীল কমিটির সদস্যদের সাথে আলাপ করেন। তারা পূজার সার্বিক প্রস্তুতি, নিরাপত্তা, এবং শৃঙ্খলা রক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। পূজামণ্ডপে অবস্থানরত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত দিক নির্দেশনা দেন তিনি।
পুলিশ সুপার মণ্ডপ পরিদর্শনকালে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন, যা ঐতিহ্যগতভাবে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের একটি অংশ। স্বাক্ষরের সময় তিনি মন্তব্য করেন যে, “নিরাপত্তার জন্য সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে, এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সকল ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।”
নিরাপত্তা ব্যবস্থার পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা প্রদান
প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় পূজামণ্ডপগুলোতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে, এবং তার সঙ্গে বাড়ে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা। পুলিশ সুপার তার পরিদর্শনের মাধ্যমে এসব স্থানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি তাদের দায়িত্বশীলতা সম্পর্কে সর্তক করেন এবং তাদের সতর্ক থেকে দায়িত্ব পালন করতে উৎসাহিত করেন।
পূজামণ্ডপে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের এই পরিদর্শন এলাকার জনগণের মাঝে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। মণ্ডপে উপস্থিত পূজারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগ জনগণের নিরাপত্তার প্রতি পুলিশ প্রশাসনের মনোযোগ ও দায়িত্বশীলতার প্রমাণ।”
একজন পূজামণ্ডপের সভাপতি বলেন, “পুলিশ সুপার নিজে এসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন এবং আমাদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। এতে আমরা পূজা উদযাপন করতে পারছি আরও বেশি শান্তিপূর্ণভাবে, কারণ জানি পুলিশ প্রশাসন আমাদের পাশে আছে।”
এছাড়া, তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও আহ্বান জানান, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তাদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করতে হবে এবং যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক কার্যক্রম সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করতে হবে।
For Your Online Shopping: SOGUT BAZAR Online Shopping
অন্যান্য প্রস্তুতি ও পরামর্শ
পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার আরও জানান, পূজার দিনগুলোতে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে এবং কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকল থানা এলাকার টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। এছাড়াও, সকল পূজামণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেন তিনি। দর্শনার্থীদের ঢোকার এবং বের হওয়ার পথে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হবে।
পুলিশ প্রশাসন এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছে এবং নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলোতে পানীয় জল ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে পুলিশ বিভিন্ন রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করবে এবং বিশেষ পরিস্থিতির জন্য একটি কন্ট্রোল রুমও স্থাপন করা হবে, যেখানে সাধারণ জনগণ জরুরি যোগাযোগ করতে পারবে।
সার্বিক পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এ ধরনের পরিদর্শন শুধুমাত্র পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নয়, বরং সমাজের সর্বস্তরে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দেয়। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, “আমাদের দায়িত্ব শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা নয়, বরং একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ সমাজ গঠন করাও। আমরা সবাই যদি মিলেমিশে কাজ করি, তাহলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। পূজা হোক শান্তি ও সম্প্রীতির উৎসব।”
এই পরিদর্শনের মাধ্যমে বরিশাল জেলা পুলিশ প্রশাসন তার কর্তব্যনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধকে আরও একবার প্রমাণ করেছে। পূজার সময় এলাকাবাসীর মধ্যে যে আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তোলা হয়েছে, তা দীর্ঘমেয়াদে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
অতএব, বরিশালের পূজামণ্ডপগুলোতে এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, যা প্রশাসনের তৎপরতারই প্রতিফলন। পূজা উদযাপনের বাকি দিনগুলোতেও একই ধরনের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছেন পুলিশ সুপার। পূজামণ্ডপের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, পূজারী ও দর্শনার্থীরা সবাই প্রশাসনের এ ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
বরিশালের পূজামণ্ডপে এ বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক পর্যবেক্ষণে প্রশাসনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা এবং পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চয়ই পূজার পরিবেশকে আরও শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ করে তুলবে।
রবিশাল জেলা পুলিশ সুপারের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন, রবিশাল জেলা পুলিশ সুপারের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন, রবিশাল জেলা পুলিশ সুপারের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন, রবিশাল জেলা পুলিশ সুপারের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন
আরও দেখুন: জামালপুর জেলা এডিসি সুমি আক্তারের পূজা মন্ডপ পরিদর্শন, বাঙলা কলেজ বিএনসিসি পেল নতুন মহিলা সিইউও