মাদারীপুরের কালকিনিতে শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল, সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ।
আজ সকালে মাদারীপুরের কালকিনিতে বিএনপির যুবদল একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলের মূল দাবি ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। যুবদলের নেতা ও কর্মীরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন এবং বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। এই মিছিলকে কেন্দ্র করে কালকিনির রাজপথে মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং উত্তেজনা ও চাঞ্চল্য দেখা যায়। মিছিলে ছিলেন কালকিনির বিভিন্ন স্থরের বিএনপি, উপজেলা ও পৌরসভা যুবদল এবং উপজেলা, পৌবসভা ও কলেজ ছাত্রদল নেতা কর্মীরা।
বিক্ষোভ মিছিলের অন্যতম মুখপাত্র জনাব আমিনুল ইসলাম, যিনি কালকিনি পৌরসভা ছাত্রদলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, বক্তব্য রাখেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। তারা শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত করেছে। হেলমেট বাহিনী গঠন করে দেশে অরাজকতা তৈরি করেছে, যার কোনো বিচার এখনো হয়নি। শেখ হাসিনার বিচারের দাবি শুধু বিএনপি বা যুবদলের নয়, বরং এটি আপামর জনগণের ন্যায্য দাবি।”
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ
যুবদলের এই বিক্ষোভে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। যুবদল নেতারা জানান, আওয়ামীলীগ দির্ঘ ১৫ বছর দেশ লুটপাট করেছে, অর্থ পাচার করেছে। মানুষের অধিকার হরণ করেছে। বিশেষ করে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের অভিযোগটি বেশ কয়েকবার উচ্চারিত হয়। আমিনুল ইসলাম তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, “আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষার্থীদের হাতে বই-খাতা না দিয়ে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বানিয়েছে এবং শিক্ষাঙ্গনকে রক্তাক্ত করেছে।”
এছাড়াও যুবদলের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের হেলমেট বাহিনী সম্পর্কে কথা বলেন। তারা অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করেছিল যারা বিভিন্ন সময়ে জনগণের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং রাজপথে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে।
শেখ হাসিনার বিচারের দাবি
বিক্ষোভের মূল লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের দাবি। যুবদলের নেতা-কর্মীরা একবাক্যে বলেন যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশে যে ধরনের রাজনৈতিক নির্যাতন এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে, তার জন্য তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত। শেখ হাসিনার বিচার দেশের মানুষের দাবি। এই দাবি কোনো দলের নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে আপামর জনগণের দাবি।
তারা আরও বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য যথেষ্ট কারণ। দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চায়, আর সেই পরিবর্তন আনতে হলে শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই করতে হবে।
বিএনপির অবস্থান
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলকে অবৈধ এবং জনবিরোধী বলে দাবি করে আসছে। তাদের মতে, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ একটি অরাজক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে যেখানে জনগণের অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিএনপি দাবি করে, বর্তমান সরকারের দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে দেশে অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস, বেকারত্ব বৃদ্ধি, এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান অবনতির জন্য বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করছে।
বিক্ষোভ মিছিলের সময় যুবদলের নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে তাদের এসব অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন এবং জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
মাদারীপুরের কালকিনিতে
আরও দেখুন: ফেসবুকে ভিডিও নির্মাতাদের আয় সহজ করছে