লেখক: মো. আশরাফুল ইসলাম
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার: স্বচ্ছতা বনাম সুবিধাবাদ।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো পাঁচ সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ এবং জাতীয় ঐক্য কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত যাচাইয়ের প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো স্বচ্ছতা (Transparency), যা রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানকে জনগণের সামনে উন্মুক্ত করছে। অনেক রাজনৈতিক দলের জন্য এটি হয়ে উঠেছে একপ্রকার ‘মাইনকার চিপা’, কারণ তারা একদিকে সংস্কার প্রশ্নে দ্বিধান্বিত, অন্যদিকে সরকারের কৌশল এবং জনমতের সামনে স্ববিরোধিতায় আটকে যাচ্ছে।

সংস্কার কমিশন ও ঐক্য কমিশনের উদ্যোগ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠনের লক্ষ্যে পাঁচটি সংস্কার কমিশন মোট ১৬৬টি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
১. রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার
২. নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন
৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
৪. রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রায়ন
৫. অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংষ্কার
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
এই সুপারিশগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জানতে জাতীয় ঐক্য কমিশন একটি ফর্ম তৈরি করেছে, যেখানে তিনটি অপশন রাখা হয়েছে:
একমত
একমত নই
আংশিক একমত
এছাড়াও দ্বিতীয় অংশে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, যদি কোনো দল সংশ্লিষ্ট সংস্কারের পক্ষে থাকে, তবে তারা কবে নাগাদ সেটি বাস্তবায়ন করতে চায়। এখানে ছয়টি অপশন রাখা হয়েছে:
১. নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে
২. নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে
৩. নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে
৪. গণপরিষদের মাধ্যমে
৫. নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে
৬. গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে
৭. প্রতিটি দলের জন্য আলাদা মতামতের জায়গা রাখা হয়েছে, যেখানে তারা নিজেদের ব্যাখ্যা প্রদান করতে পারবে।
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
ইউনূস সরকারের কৌশল: কিছু দলের জন্য ফাঁদ?
ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে যে, এই ভোট এবং মতামত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে, যা জনসাধারণ সহজেই দেখতে পারবে। ফলে, কোনো দল মুখে একরকম বলে এবং গোপনে ভিন্ন কিছু করতে চাইলেও তা সম্ভব হবে না। অর্থাৎ, রাজনৈতিক দলগুলো আর গোপনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে জনসমক্ষে ভিন্ন কথা বলে পার পাবে না।
এখানেই বিএনপির প্রধান সংকট। কারণ, তারা গত কয়েক দশক ধরে একধরনের দ্বৈত নীতি অবলম্বন করে এসেছে—একদিকে জনগণের সামনে গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদের স্লোগান, অন্যদিকে সরকারের সঙ্গে পর্দার আড়ালে সমঝোতা। এখন যখন জনগণের সামনে তাদের অবস্থান পরিষ্কার হয়ে যাবে, তখন তারা নিজেদের স্ববিরোধিতার কারণে সংকটে পড়বে।

বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট
গত দুই দিন ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই বিষয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে বলে একটা সুত্র থেকে জানা গেছে। দলের অনেক সিনিয়র নেতা মনে করছেন, সরকার তাদেরকে “বাচ্চাদের মতো ট্রিট করছে,” পরীক্ষা নিচ্ছে! অথচ বাস্তবতা হলো, এটি কোনো শিশুসুলভ পরীক্ষা নয়, বরং রাজনৈতিক স্বচ্ছতার একটি উদ্যোগ। বিএনপি যদি সত্যিকার অর্থে জনকল্যাণমূলক রাজনীতি করত, তবে তাদের স্বচ্ছতা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু থাকত না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা স্পষ্টতই দ্বিধান্বিত।
বিএনপির আপত্তির তালিকা: তাদের প্রকৃত অবস্থান
যখন বিএনপি নিজেদের অবস্থান চূড়ান্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে, তখন জনগণের সামনে তাদের প্রকৃত রূপ উন্মোচিত হচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে যে, বিএনপি মূলত রাষ্ট্রীয় সংস্কারেই আগ্রহী নয়। তাদের আপত্তির তালিকাটি দেখলেই সেটি পরিষ্কার হয়:
রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কারে আপত্তি!
স্থানীয় নির্বাচনে আপত্তি!
আনুপাতিক হারে নির্বাচনে আপত্তি!
১৯৭২-এর সংবিধান পুনর্বহালে আপত্তি!
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণে আপত্তি!
উগ্র হিন্দুত্ববাদী ইস্কন নিষিদ্ধকরণে আপত্তি!
আওয়ামী রাষ্ট্রপতি অপসারণে আপত্তি!
বিপ্লবী ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনে আপত্তি!
ভারতের পন্থি প্রভাবশালী মিডিয়া নিষিদ্ধকরণে আপত্তি!
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশে আপত্তি!
জুলাই বিপ্লবীদের স্বীকৃতিতে আপত্তি!
আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আপত্তি!
ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে আপত্তি!
আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনে আপত্তি!
ইসলামী দল প্রধান বিরোধীদল হলে আপত্তি!
বিএনপির লোক ছাড়া সরকারি পদে আপত্তি!
ইসলামী রাজনীতিতে আপত্তি!
গণভোটে আপত্তি!
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
এই তালিকা স্পষ্ট করে যে, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে কোনো গণতান্ত্রিক সংস্কারে আগ্রহী নয়, বরং নিজেদের পুরনো সুবিধাবাদী রাজনীতি ধরে রাখতে চায়।
রাজনীতিতে স্বচ্ছতার যুগের সূচনা
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছতার অভাব ছিল। কিন্তু ইউনূস সরকারের এই সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের সামনে আরও বেশি জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। ফলে, মুখে গণতন্ত্রের বুলি আউড়িয়ে গোপনে সুবিধাবাদী চুক্তি করার দিন শেষ হয়ে আসছে।
বিএনপির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সংকট হলো, তারা কখনোই স্বচ্ছ নীতি গ্রহণ করেনি। তারা একদিকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দেখায়, অন্যদিকে পর্দার আড়ালে বিভিন্ন সুবিধার জন্য দরকষাকষি করে। এখন যখন তাদের প্রতিটি অবস্থান জনসমক্ষে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, তখন তারা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছে।
রাজনৈতিক সংস্কারের এই নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। যারা সত্যিকারের গণতন্ত্র চায়, তারা এই স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাবে। কিন্তু যারা সুবিধাবাদী, তারা এতে আতঙ্কিত হবে। বিএনপি ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে যে, তারা দ্বিতীয় দলের অন্তর্ভুক্ত।
তবে বাংলাদেশের জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন। তারা মুখের কথায় নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজনীতিবিদদের বিচার করবে। বিএনপির সামনে এখন দুটি পথ—স্বচ্ছতা ও সংস্কারের পথে হাঁটা, নাকি আগের মতো অস্পষ্ট ও সুবিধাবাদী রাজনীতি করে জনসমর্থন হারানো। সময় বলে দেবে, তারা কোন পথ বেছে নেয়।
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
লেখকের অন্যান্য লেখা দেখুন:
একনায়কত্বের ষোলো বছর: অনৈতিকতার বিষবৃক্ষ ও জাতির নৈতিক সংকট
বাংলাদেশ গত ১৬ বছরে এক অন্ধকার যুগের মধ্যে দিয়ে গেছে, যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে অনৈতিকতা, দুর্নীতি, বিচারহীনতা, খুন, ধর্ষণ ও রাহাজানির সংস্কৃতি গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্র কেবল ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য দমন-পীড়ন চালায়নি, বরং দেশকে এক নৈতিক সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো। এই দীর্ঘ শাসনকালে এমন একটি জাতি তৈরি হয়েছে, যারা ন্যায়-অন্যায়ের তোয়াক্কা না করে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগত স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

দেশের শাসনব্যবস্থায় গুম, খুন, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহারকে স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছিল। ফলে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারব্যবস্থা, শিক্ষাক্ষেত্র, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামগ্রিক সমাজব্যবস্থায় এক চরম নৈতিক অবক্ষয় নেমে এসেছে। এই পরিস্থিতির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনও বিপন্ন হয়ে পড়েছে, কারণ ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন না থাকলে সমাজ অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়।
নৈতিক অবক্ষয়ের সূচনা ও বিকাশ
স্বৈরাচারী শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করা এবং জনগণের মধ্যে অনৈতিকতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের সমাজে যে ধরনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অনৈতিকতা প্রবেশ করেছে, তা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য চরম উদ্বেগের বিষয়।
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
গুম-খুন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি
বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের হার ভয়ঙ্করভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিলো। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ভিন্নমতাবলম্বী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ মানুষ—কেউই নিরাপদ ছিল না। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধীদের নিপীড়ন করা হয়েছে এবং এসব অপরাধের কোনো বিচার হয়নি, যার ফলে সেই অপরাধ প্রবণতা থেকে মানুষের বেরিয়ে আসতে সময় লাগছে।
আইনের শাসন অনুপস্থিত থাকলে সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে, অপরাধ করেও পার পাওয়া সম্ভব। ফলে সমাজের নিচের স্তরেও অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। এখন দেখা যায়, সামান্য পারিবারিক বিরোধেও খুনোখুনি হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনেই প্রকাশ্যে মানুষ খুন করা হচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি মানুষকে ন্যায়বিচার থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে, ফলে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ, সহিংসতা এবং খুন-খারাবির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির উত্থান
দুর্নীতি বাংলাদেশে এক প্রতিষ্ঠিত বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পতিত স্বৈরাচার আমলের ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তারা পর্যন্ত দুর্নীতিকে নিজেদের অধিকার মনে করেছিলো। ব্যাংক লুটপাট, বড় প্রকল্পে দুর্নীতি, সরকারি টেন্ডার বাণিজ্য, জমি দখল—এসব অনিয়ম নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যা থেকে বেরিয়ে আসতে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
বড় বড় দুর্নীতির পাশাপাশি ছোটখাট দুর্নীতিও সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এখন ঘুষ না দিলে কোনো কাজ করাতে পারে না। ফলে দুর্নীতিকে অনেকেই স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও বেশি নীতিহীন করে তুলবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিকতার অবক্ষয়
শিক্ষা একটি জাতির মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু গত ১৬ বছরে শিক্ষা খাতেও চরম দুর্নীতি, অনিয়ম নৈতিকতাহিন শিক্ষনীতি ও সকল দলীয়করণ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় আনুগত্যই মূল যোগ্যতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেধার মূল্যায়ন ছিল না, ছাত্রলীগের দৌরাত্ম্যে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল।
প্রশ্নপত্র ফাঁস, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, পরীক্ষার ফল পরিবর্তন, মেধাবীদের দমিয়ে রাখা—এসবের ফলে শিক্ষাঙ্গনে নৈতিকতা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হয়েছিল। যে প্রজন্ম প্রশাসন ও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে, তাদের দ্বারা দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব কি করে?
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের উল্লম্ফন
একজন স্বৈরশাসকের আমলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সমাজের দুর্বল অংশ, বিশেষত নারী ও শিশু। গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং নারীদের প্রতি সহিংসতা মারাত্মকভাবে বেড়েছে।
ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিচারহীনতার কারণে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরাধীরা জানে, তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় আছে, ফলে তারা নির্বিঘ্নে এসব ঘৃণ্য অপরাধ করে যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিন ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা উঠে আসছে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় না। ফলে সমাজের ভেতরে একটি ভয়ঙ্কর বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে। বিস্তারিত দেখুন…
মাত্র ১ সপ্তাহ চিয়া সিড খেলে শরীরে যে পরিবর্তনগুলো দেখা যাবে
বীজজাতীয় খাবারের মধ্যে চিয়া সিড অন্যতম পুষ্টিকর উপাদান। মিন্ট প্রজাতির এই বীজ শক্তি জোগায় এবং স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। ‘দ্য ইয়োগা ইনস্টিটিউট’ অনুসারে, মাত্র এক সপ্তাহ চিয়া সিড খেলে শরীরে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।

For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd
১. বার্ধক্যের প্রক্রিয়া ধীর করবে
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ চিয়া সিড ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে কাজ করে, যা কোষের ক্ষতি ও দ্রুত বয়স বৃদ্ধির কারণ। দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও দুশ্চিন্তা থেকে সৃষ্ট ফ্রি র্যাডিক্যালের ফলে ক্যানসার, হৃদ্রোগ ও প্রদাহজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিয়া সিড খেলে ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকবে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে
চিয়া সিড উচ্চ মাত্রার ফাইবার যুক্ত, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। প্রতিদিন ২ চা–চামচ চিয়া সিড সকালে নাশতার সঙ্গে খেলে ক্ষুধা কমবে এবং ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে। এছাড়া, এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে মধু ও লেবুর সঙ্গে খেলে মেদ পোড়ানোর গতি বাড়বে।

৩. হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী
চিয়া সিডে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং মিনারেলস আছে, যা কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এটি হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে কার্যকরী।
৪. হাড়ের গঠন মজবুত করবে
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস সমৃদ্ধ হওয়ায় চিয়া সিড হাড়কে শক্তিশালী করে। এটি পেশি ও স্নায়ুর জন্যও উপকারী।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে
চিয়া সিড ধীরে কার্বোহাইড্রেট রক্তে মেশায়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া (সুগার স্পাইক) কমায়। টাইপ-টু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী।

কীভাবে খাবেন?
- সকালে বা সন্ধ্যায় খাওয়া যেতে পারে।
- প্রতিদিন ১০ গ্রাম (২ চা-চামচ) থেকে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।
- পানিতে ভিজিয়ে বা স্মুদি, সালাদ, সিরিয়াল, ওটসের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই চিয়া সিডের উপকারিতা অনুভব করতে পারবেন!
For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd