আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:

প্রিয় ভাইয়েরা,
ইতিহাস আমাদের সামনে সব সময় একটি আয়নার মতো থাকে, যা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আমরা বারবার একই ভুল করি এবং ইতিহাসের সেই আয়নায় নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখতে ব্যর্থ হই। আজ যারা হঠাৎ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দিশেহারা, হতাশ, কিংবা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন—তাদের বলছি, শান্ত হন। বাস্তবতাকে মেনে নিন এবং ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের ও পরিবারের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না।

আপনাদের কষ্ট হচ্ছে, আমরা বুঝি। কারণ দীর্ঘদিন ধরে আপনারা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিলেন। দল আপনাদের বলেছে, শেখ হাসিনাই এই দেশের রক্ষক, শেখ হাসিনাই উন্নয়নের প্রতীক। আপনাদের বিশ্বাস করতে বাধ্য করা হয়েছে যে, এই দল ও নেত্রী ছাড়া বাংলাদেশ চলবে না, ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা কী বলছে? কিন্তু বাস্তবতা হয়েছে নেত্রী আপনাদের বিপদের মুখে ফেলে নিজে পালিয়ে গেছে।

সত্য হলো, শেখ হাসিনা ছিলেন একজন একনায়ক। তিনি গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র চালিয়েছেন, নিজের স্বার্থকে রাষ্ট্রের স্বার্থের চেয়ে বড় করে দেখেছেন। যার ফলে তার শাসনামলের পরিণতি হয়েছে লজ্জাজনক পতন।

শেখ হাসিনার ভুল ও তার পতনের কারণ:
তিনি জনগণকে প্রতারিত করেছেন
একজন নেতার প্রধান দায়িত্ব জনগণের সেবা করা। কিন্তু শেখ হাসিনা জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন, তাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। সাধারণ মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে কষ্ট পাচ্ছিল, যখন দেশে বেকারত্ব বাড়ছিল, যখন ব্যবসায়ীরা দেউলিয়া হচ্ছিল, তখন তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে দেখাতেন, ‘সবকিছু ঠিক আছে!’

গণতন্ত্র হত্যা করেছেন
তিনি কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন দেননি। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন, দিনের ভোট রাতে করেছেন। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা—সবকিছু দলীয়করণ করেছেন। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া বারবার ক্ষমতায় বসেছেন। এমন একনায়কতন্ত্র বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না, সেটাই হয়েছে।

লুটপাট ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন
তাঁর দল ও পরিবারের সদস্যরা, আত্মীয়-স্বজন, ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করেছে। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, ব্যাংক লুট হয়েছে, মানুষের কষ্টের টাকা চুরি হয়েছে। অথচ জনগণকে বলা হয়েছে, ‘উন্নয়ন হচ্ছে!’

প্রশাসনকে অস্ত্র বানিয়েছেন
পুলিশ, র‍্যাব, প্রশাসনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, বিরোধী নেতাকর্মীদের গুম-খুন করা হয়েছে। এই দমন-পীড়নের রাজনীতি শেষ পর্যন্ত তাকে রক্ষা করতে পারেনি।

বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন
তিনি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছেন, বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু যখন সময় এলো, তার প্রভুরা তাকে বাঁচাতে আসেনি। ইতিহাস বলে, বিদেশিরা কখনো নিজের স্বার্থের বাইরে কাউকে সাহায্য করে না। শেখ হাসিনা সেটাই বুঝতে পারেননি।

এখন যারা তার অনুগত কর্মী ছিলেন, তারা হতবিহ্বল। হঠাৎ এভাবে সবকিছু পাল্টে যাবে, ভাবতে পারেননি। কিন্তু এটাই স্বৈরশাসনের চিরন্তন পরিণতি।

আপনাদের জন্য করণীয় কী?
আবেগ নয়, বাস্তবতাকে মেনে নিন
হাসিনার পতন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু সত্যকে অস্বীকার করলে চলবে না। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে হবে।

কোনো উসকানিতে পা দেবেন না
এখন যারা আপনাদের উসকানি দিচ্ছে, তারা কোথায়? তারা কেউ ইন্ডিয়া, কেউ দুবাই, কেউ লন্ডন, কেউ আমেরিকায়, কেউ কানাডায়। বিলাসবহুল বাড়িতে বসে, এসির বাতাসে আরামের ঘুম দিয়ে আপনাদের রাস্তায় নামতে বলছে! কিন্তু আপনারা যদি মাঠে নামেন, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন, তাহলে কি তারা আপনাকে বাঁচাতে আসবে?

কখনোই না! বরং তারা তখনো বিদেশে বসে ভালো খাবার খাবে, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবে, নতুন নতুন ব্যবসা করবে। আর আপনার পরিবার পড়বে বিপদে।

নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ ভাবুন
রাজনীতি থাকবে, ক্ষমতার পালাবদল হবে। কিন্তু জীবন একবারই আসে। এখন যদি অযথা রাজপথে গিয়ে জনহনের হাতে পিটুনি পুলিশেরে হাতে বন্দি হয়ে জেলে যান, তাহলে পরবর্তী ১২-১৫ বছর আপনাদের দুর্ভোগের মধ্যে কাটবে।

যারা আপনাদের উসকানি দিচ্ছে, তারা কি কখনো আপনাদের পরিবারের খবর নিয়েছে? আপনার সন্তানের পড়াশোনা, আপনার সংসারের খরচ, আপনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে?

কখনো না! বরং তারা নিজেদের সন্তানদের বিদেশে পড়িয়েছে, নিজেরা ব্যাংক ব্যালেন্স করেছে, বাড়ি বানিয়েছে। আর সাধারণ নেতাকর্মীদের ভুলিয়ে রেখেছে ‘নেত্রীর প্রতি আনুগত্য’ দেখানোর নাটকে।

কৌশলী হন, সময়ের অপেক্ষা করুন
রাজনীতি শুধু আবেগের খেলা নয়, এটি কৌশলের খেলা। যারা বুদ্ধিমান, তারা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে। শেখ হাসিনার পতনের পর তার দল রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরতে ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এবারও তারা সহজে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। অন্তত ১২ বছর সময় লাগবে।

এখন যদি অযথা ভুল সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আগামী ১২ বছর আপনাদের ও আপনাদের পরিবারের কষ্টের মধ্যে কাটবে।

নতুন করে ভাবুন, বিকল্প পথ খুঁজুন
আপনাদের এখন বিকল্প চিন্তা করতে হবে। কেউ ব্যবসা শুরু করতে পারেন, কেউ নতুন চাকরির খোঁজ করতে পারেন। জীবন এক জায়গায় থেমে থাকে না। রাজনীতি ছাড়া জীবন চলে না—এই ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

বিদেশে পালিয়ে থাকা নেতাদের নিয়ে সতর্ক হোন
এখন যারা আপনাদের উসকানি দিচ্ছে, তারা কি নিজেরা মাঠে নেমেছে?

কেউই নামেনি! তারা সবাই বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, স্যুট-টাই পরে বিদেশে সভা করছে, সাংবাদিকদের সামনে নাটক করছে। অথচ আপনাদের বলছে ‘আন্দোলন করুন, সংগ্রাম করুন!’

এই প্রতারণা বুঝতে শিখুন। এরা কখনোই আপনাদের জন্য ভাবে না। বরং আপনাদের ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে।

শেষ কথা:
প্রিয় ভাইয়েরা, সময় এখন বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাজনীতি কখনোই চিরস্থায়ী নয়, কিন্তু জীবন অনেক মূল্যবান। নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন না।

উসকানিতে পা দেবেন ।
নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখুন।
নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন।
আবেগ নয়, কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিন।

শেখ হাসিনা আপনাদের জন্য কিছু করেননি, বরং ব্যবহার করেছেন। এখন আপনাদের উচিত নিজেদের জীবন ও ভবিষ্যৎ বাঁচানো।

ভুল করবেন না, হঠকারিতার সিদ্ধান্ত নেবেন না, পালিয়ে থাকা নেতার কথায় আন্দোলনে যাবেন না, নিজের ভবিষ্যত নিজেই গড়ে তুলুন, দেশকে ভালোবাসুন, দেশের সাধারন মানুষের চাহিদা বুঝুন!

-লেখক: মো. আশরাফুল ইসলাম

For your online Shopping: SOTUT BAZAR , Visit Sogut Bazar Website: Sogutbazar.com.bd

আরও দেখুন…

দেশপ্রেমের সংকট ও ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা: বর্তমান প্রেক্ষাপট

দেশপ্রেমের সংকট ও ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা: বর্তমান প্রেক্ষাপট
দেশপ্রেম এক বিশাল দায়িত্ববোধ এবং ত্যাগের অনুভূতি, যা কেবলমাত্র আবেগে সীমাবদ্ধ নয়। এটি এমন একটি মানসিক অবস্থা, যা কাজের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশপ্রেম প্রায়শই ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। যারা দেশের হাল ধরছেন, তাদের অনেকেই নিজের আখের গোছানোর ধান্দায় মগ্ন, দেশের প্রকৃত কল্যাণে কাজ করার মানসিকতা কিংবা সদিচ্ছার অভাব লক্ষণীয়।

আজ আমরা এমন একটি পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি, যেখানে ক্ষমতার লড়াই এবং দলীয় স্বার্থ দেশের অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠেছে। এই সংকট শুধু আমাদের জাতীয় উন্নয়নকে থামিয়ে দিচ্ছে না, বরং আমাদের সমাজকে বিভক্ত করছে। দেশপ্রেমের অভাব, বিভাজনের রাজনীতি, এবং বৈষয়িক স্বার্থে মগ্নতার কারণে জাতি হিসেবে আমরা আজ পিছিয়ে পড়ছি।

দেশপ্রেম মানে কেবল দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা বলা বা জাতীয় দিবসগুলোতে পতাকা উত্তোলন নয়। এটি এমন একটি মানসিক অবস্থা, যেখানে দেশকে সর্বাগ্রে রেখে তার উন্নয়নে কাজ করা হয়। এর অর্থ হলো ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে, দেশের জন্য এমন কিছু করা যা সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনে।

কিন্তু আমরা কি সত্যিই দেশকে ভালোবাসি? যারা আজ দেশের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, দলীয় সংঘর্ষে জড়ায়, চাঁদাবাজি করে, এবং ক্ষমতা দখলের জন্য সহিংসতায় মেতে ওঠে, তারা কি সত্যিই দেশপ্রেমিক? প্রকৃত দেশপ্রেমিকরা কখনোই দেশের মানুষের শান্তি এবং স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে না।

আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশকে ভালোবাসা মানে কেবল আবেগপ্রবণ স্লোগান দেওয়া নয়; এটি দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এটি এমন এক দায়িত্ব, যা দেশের প্রতিটি নাগরিক, রাজনীতিবিদ এবং নেতার উপর সমানভাবে বর্তায়।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জুলাই-আগস্ট বিপ্লব আমাদের একটি বড় শিক্ষা দিয়েছে। এই বিপ্লব ছিল একটি ঐতিহাসিক সুযোগ, যা আমাদের দেখিয়েছে, দেশের জন্য সবাই একত্রিত হলে কতটা অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এই বিপ্লবের পরে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ ত্যাগ করে দেশের কল্যাণে কাজ করার পরিবর্তে পুনরায় ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে।

জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পরে, দেশের পুনর্গঠন এবং উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার একটি সুবর্ণ সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগানোর পরিবর্তে, আমরা দেখেছি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পুরনো বিরোধিতা এবং ক্ষমতার দৌড় প্রতিযোগিতা।

যদিিএই সময় সবাই একত্রিত হয়ে দেশের পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করা যায়, তবে বাংলাদেশ হয়তো একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আরও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে। বিস্তারিত দেখুন…

আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী ভাইদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *